চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে কথা বললে জেএসএস’র গাঁ জ্বলে : দীপংকর তালুকদার

প্রকাশঃ ০৪ নভেম্বর, ২০১৮ ১২:৪৪:৩১ | আপডেটঃ ১৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০৯:১০:০৪
শাহ আলম, সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রের কথা বললে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস)’র গাঁয়ে  জ্বালা-যন্ত্রণা করে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার।

আজ ৩রা নভেম্বর। শোকাবহ জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে রাঙামাটি তবলছড়ি বাজারের বটতলা প্রাঙ্গণে জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের হাজার হাজার সাধারণ জনগণ নিয়ে আমরা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলাম। সেই জন্যে সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদারের রাগ, অভিমান ও গোশসা।

কারণ তিনি বলেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাথে জনসংহতি সমিতি দলের কোন বিরোধ নাই, ভালবাসা আছে। তাহলে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ কি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রের কথা বলার কারণে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে? আমরা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রের কথা বিরুদ্ধে কথা বলেছি তাই বলে কি কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ আমাদের কে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে, করে নাই।

জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রের ভালবাসা তখনই পাবে যখন তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আওয়ামীলীগের সাথে এক সঙ্গে পথ চলতে পারবে। তাদের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, গুম, হত্যা ও অবৈধ অস্ত্র পরিহার করতে হবে। তাহলেই কেবল কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামীলীগের ভালবাসা আপনারা পাবেন, এছাড়া নয়।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামীলীগের সাথে পথ চলতে না পারলে জনসংহতি সমিতি পথ পাড়ি দেওয়ার জন্য অন্য দলের অভাব হবে না। কারণ অন্যদিকে রয়েছে বিএনপি। বিএনপি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রে বিশ্বাস করে। তাদের সাথে জনসংতি সমিতি চলতে পারবে। বিএনপির সাথে জেএসএস এর মিল রয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রে বিশ্বাস করে বিধায় পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আন্দোলন নিয়ে একটি শব্দ করে নাই। যখন ই আমরা অবৈধ অস্ত্রের কথা বলি ঠিক তখনি জনসংহতি সমিতির শরীর জ্বালা পোড়া করে।

রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, সাধারন সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর, জেলা পরিষদের চেয়াম্যান বৃষকেতু চাকমা, যুগ্ন-সম্পাদক আব্দুল মতিন, সাবেক পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব, , শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ছাওয়াল উদ্দিন, জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজল, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমাসহ অন্যন্যা নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

সভায় বক্তারা বলেন, জেল হত্যা বাঙালি জাতির জন্য ইতিহাসের একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর স্বাধীনতা বিরোধীরা নির্মমভাবে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে।

তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট একই সূত্রে গাঁথা। জাতীয চার নেতার অন্যতম খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের সময থেকেই পাকিস্তানের চর হিসেবে কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর তার যোগ্য রাজনৈতিক উত্তরসূরীদেরও হত্যা করা হয, যেন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের রাজনীতিকে কলুষিত করেন, যার মাশুল জাতি আজো দিয়ে যাচ্ছে।

আলোচনা সভায় বক্তারা তাদের বক্তব্যে জাতীয় চার নেতার সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে জেলহত্যার রাজনৈতিক প্রেক্ষিত তুলে ধরেন।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোদ্ধা জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে এক মিনিট দাঁঢ়িয়ে নীরবতা পালন করা করেণ।


প্রসঙ্গ: আজ ৩রা নভেম্বর। শোকাবহ জেলহত্যা দিবস। মানব সভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কময়, রক্তঝরা ও বেদনাবিধুর একটি দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ৩রা নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে চার জাতীয় নেতা বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions