শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪

নানিয়ারচরের উপ নির্বাচনে থাকছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

প্রকাশঃ ১৯ জুলাই, ২০১৮ ০৯:১১:৫১ | আপডেটঃ ২৪ মার্চ, ২০২৪ ০৮:৪৭:৫০  |  ১৭৫৯
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির নানিয়ারচরে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশে নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কঠোর ও নিশ্চিদ্র নিরাপত্তায় নামছে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, সেনাবাহিনীসহ যৌথবাহিনী। এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৫ জুলাই। উপজেলা ও জেলা নির্বাচন অফিস এসব তথ্য জানিয়েছে।

সরেজমিনে ঘরে দেখা গেছে,  নির্বাচন ঘিরে জনমনে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না কেউ। প্রার্থীরা  যদিও স্বতন্ত্র-কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন ঘিরে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে পরস্পরবিরোধী দুটি আঞ্চলিক দল। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী হওয়ার সাহস পাননি দল দুটির কেউ।

উপজেলা নির্বাচন অফিস জানায়, ২৫ জুলাইয়ের নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন চার প্রার্থী। তাদের মধ্যে রূপম দেওয়ান প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলেন। প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন প্রগতি চাকমা, প্রণতি রঞ্জন খীসা ও কল্পনা চাকমা। তিন প্রার্থী-ই স্বতন্ত্র। তবে প্রগতি চাকমা ও প্রণতি রঞ্জন খীসার পক্ষে বিবাদমান ও পরস্পরবিরোধী দুই বৈরি সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্্রন্ট (ইউপিডিএফ) এবং জেএসএস সংস্কারবাদী দলের সমর্থন রয়েছে রয়েছে বলে জানা গেছে। এখন জয় ছিনিয়ে নিতে মরিয়া উভয় প্রার্থীর পক্ষ দুটি। উভয় পক্ষে ভেতরে ভেতরে সাধারণ জনগণকে ভোট প্রয়োগে প্রভাব খাটানো হচ্ছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে। এতে জনমনে বিরাজ করছে চাপা আতঙ্ক। নির্বাচন মতামত ব্যক্ত করতে মুখ খোলার সাহস করছে না কেউ। এমনিতে ৩ মে উজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমাকে এবং পরদিন ৪ মে শক্তিমানের শেষকৃত্যে যাওয়ার পথে আরও ৫ জনকে প্রকাশ্য ব্রাশফায়ারে খুনের ঘটনায় আতঙ্কগ্রস্ত সেখানকার মানুষ। ভয়ে অনেকে এলাকা ছাড়া হয়ে নিরাপদে আত্মগোপন করেছেন বলেও জানা গেছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অনেকে এলাকা ছেড়ে রাঙামাটি শহরে অবস্থান করছেন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং অফিসার সাইদুর রহমান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে নানিয়ারচরে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। পাহাড়ি এলাকার কেন্দ্রগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। নির্বাচনের দিন সকাল ৮টা হতে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মোট ১৪ কেন্দ্রে টানা ভোটগ্রহণ করা হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শানিতপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করতে ইসির নির্দেশে পুলিশ, আনসার, ভিডিপিসহ র‌্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে। নির্বাচনে কেউ বিশৃংখলা সৃষ্টি বা আইনশৃক্সক্ষলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নির্বাচন কমিশন সুত্রে জানা গেছে, নানিয়াচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনে মোট ভোটার ৩২,৮৫৪জন, এর মধ্যে পুরুষ ১৭০০৮জন এবং নারী ১৫৮৪৬জন। মোট ১৪টি কেন্দ্র ৮৩টি ভোট কক্ষে ভোট গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ১৪জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৮৩জন সহকারি প্রিজাডিং অফিসার এবং ১৬৬জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০জন পুলিশ, আনসার, বিজিবি সদস্যসহ স্ট্রাইকিং বাহিনী হিসেবে র‌্যাব থাকবে। ভোটারদের নিরাপত্তার কথা  বিবেচনা করে কেন্দ্রের বাইরে এবং বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিবে। এর মধ্যে নানিয়াচরের স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।


উল্লেখ্য, ৩ মে নিজ কার্যালয়ের সামনে আততায়ীর গুলিতে প্রকাশ্য নিহত হয়েছিলেন নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমা। এতে পদটি শূন্য হওয়ায় উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। নির্বাচন পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নারী ভাইস চেয়ারম্যান কোয়ালিটি চাকমাকে।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions