শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪

অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন নয়: ফিরোজা বেগম চিনু এমপি (ভিডিওসহ)

প্রকাশঃ ১৩ মে, ২০১৮ ১২:২২:৩৮ | আপডেটঃ ২৮ মার্চ, ২০২৪ ০৫:৫২:৪৭  |  ৫১৫০
শাহ আলম, সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। যতদিন পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ না হবে  ততদিন পর্যন্ত শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না বলে উল্লেখ করে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও রাঙামাটির সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু এমপি বলেছেন,  অস্ত্র জমাদানের  মাধ্যমে আপনারা  স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন।  তখন শান্তি চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে আগে যেভাবে আপনাদের পাশে ছিলাম, এখনো থাকবো। আমরা অবৈধ অস্ত্রধারীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, যদিও চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী তার পরেরও বলতে চাই, স্বাভাবিক জীবনে আপনারা ফিরে আসুন।

রোববার সকালে রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে জেলা প্রশাসক কার্যালয় সংলগ্ন নিউমার্কেট চত্ত্বরে আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা তিনি যে সংগঠনের হোক না কেন, তার দোষ-গুন থাকতেই পারে। দোষ থাকলে আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। বিচারে যা রায় হবে তিনি তা মেনে নিবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, জনপ্রতিনিধি শক্তিমান চাকম কে দিনে-দুপরে প্রকাশ্য-দিবালোকে  গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমন বিচার পৃথিবীতে কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। একটি মানুষ মৃত্যুর পর তার শেষকৃত্যে যাওয়ার পথে আরো ৫জনকে হত্যা করা হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলো কারা করছে? যাদের হাতে অবৈধ অস্ত্র আছে, যারা চাঁদাবাজিকে নিজেদের সম্বল মনে করে, পাকাপোক্ত করতে মরিয়া, তারাই এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, যে যে সংগঠনেরই নেতা হোক না কেন, সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতা হলেও তার যেন স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। কারণ তার স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকার পাওয়ার অধিকার আছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে গুম, চাঁদাবাজি, অপহরণ আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। আমরা যেহেতু মাটি ও মানুষের জন্য রাজনীতি করি। তাই আমরা বলতে চাই, যতদিন পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হবে না, ততদিন পর্যন্ত আমরা মাঠ থেকে কোথাও যবো না। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের যে অবস্থান ছিল তা আমরা দৃঢ় রাখবো। আমরা ইচ্ছা করলে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে পারি। আমরা ইচ্ছা করলে তাদের প্রতিহত করতে পারি। কিন্তু আমরা মানুষের ভাষা বুঝি। স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে আমরা বিশ্বাস করি। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থাকে বিশ্বাস করি। সেই কারণেই আমরা ধৈর্য্য ধরে আছি । এই পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত একটা আতঙ্ক নিয়ে ঘুরে বেড়াই।


সকাল ১০টায় শহরের নিউমার্কেট চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির সভাপতি সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদার। রাঙামাটি সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত এ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও রাঙামাটির সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, সচেতন নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বর, রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি বেলায়েত উদ্দিন বেলাল, জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পরেশ মজুমদার, রিজার্ভ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন ও রাঙামাটি আসবাবপত্র সমিতির সভাপতি শামীম আহমেদ প্রমুখ।

তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে বলেন, আমার কষ্ট লাগছে, প্রশাসনকে বলতে চাই, শক্তিমান চাকমা মরে যাওয়ার পরের দিন, এতবেশি টহল ছিল কিন্তু সেই টহলকে এড়িয়ে কিভাবে ব্রাশ ফায়ার করা হয়? শস্যের ভিতর ভূত আছে কিনা আমরা জানি না! আমরা চাই সৃষ্টি করতে আমাদেরকে স্বাভাবিক মৃত্যু যেভাবে প্রদান করে আমরা সেভাবে মরবো। কারো হাতে অস্বাভাবিকভাবে যেন কারো মৃত্যু না হয়।


তিনি সর্বশেষ তিনি বলেন, এই সুন্দর পার্বত্য চট্টগ্রামকে সুন্দর একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে তুলি। আপনাদের ন্যায় সংঙ্গত আন্দোলনের সাথে আমরা অতীতেও ছিলাম, এখানো আছি, সামনেও থাকবো বলে প্রত্যাশা করি।  

সমাবেশের আগে রাঙামাটি পৌরসভা চত্ত্বর হতে একটি সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল বের করে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নিউমার্কেট চত্ত্বর গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।  

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions