শুক্রবার | ২৯ মার্চ, ২০২৪

জাতীয় বাজেটে আদিবাসীদের উন্নয়নে বরাদ্দের দাবি

প্রকাশঃ ২০ জুন, ২০১৯ ০৯:৪২:৩৫ | আপডেটঃ ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০২:১৩:০০  |  ৮৪৬
সিএইচটি টুডে ডট কম ডেস্ক। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, এএলআরডি এবং কাপেং ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে “আদিবাসীদের উন্নয়নে অগ্রাধিকার এবং জাতীয় বাজেটে তাদের অনুকূলে বরাদ্দের” দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদার পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনের মূল বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি এবং কাপেং ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন রবীন্দ্রনাথ সরেন, কাপেং ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার হিরনমিত্র চাকমা প্রমুখ।

মূল বক্তব্যে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার বাড়লেও দেশের আদিবাসী জাাতিগোষ্ঠীদের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ বাড়েনি।  তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য বিগত অর্থবছরের বাজেটে ১৩০৯ কোটি টাকা বরাদ্ধ রাখা হলেও এবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১১৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১১৯৪ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। এছাড়াও সমতলের আদিবাসীদের জন্য বিগত অর্থবছরের তুলনায় ১০ কোটি বাড়িয়ে ৫০ কোটি করা হলেও ২০ লক্ষ আদিবাসীর জন্য সেটা যথেষ্ট কম। গড় প্রতি মাথাপিছু মাত্র ২৫০ টাকা বরাদ্ধ দিয়ে সমতলের আদিবাসীদের কি ধরণের উন্নয়ন সাধন হবে বলেও তিনি প্রশ্ন রাখেন।  সমতলের আদিবাসীদের জন্য আলাদা কোন মন্ত্রণালয় না থাকার কারণে উন্নয়ন বাজেটে বরাবরের মতই তারা উপেক্ষিত ও অবহেলিত থাকে। অথচ বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশনের কাজ অব্যাহত রাখার কথা থাকলেও এখনো ভূমি কমিশন-ই গঠন করা হয়নি।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ নির্বাহের জন্য যে কমিটিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা সাধারণ জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে লোক দেখানে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন । যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা অপ্রতুল দাবী করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছর ধরে আদিবাসীরা সরকারকে যে পরিমাণ কর প্রদান করে আসছে সেটা ফেরত দিলেও আদিবাসীদের অর্থনৈতিক অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নয়ন ঘটতো।

এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশতেহারে আদিবাসীদের সামাজিক জীবনের নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তারা প্রতিনিয়ত নিজ ভূমি থেকে উৎখাত হচ্ছেন। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ পরিচালনায় সরকার কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এতে সরকারের অঙ্গীকার পালনে সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ সুপারিশমালায় বলা হয়, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে, পাহাড়ের আদিবাসীদের মত পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে, পার্বত্য আদিবাসীদের অধিকার ও আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কিত বেশকিছু রাষ্ট্রীয় নীতি বা আইন যেমন- পূর্ববঙ্গীয় রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত্ব আইন-১৯৫০, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ১৯৯৭, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন-১৯৯৮, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন আইন ২০০১ ইত্যাদি আইন ও নীতিসমূহ বাস্তবায়নের জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদসমূহের সুশাসন  ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা শক্তিশালীকরণে পর্যাপÍ বাজেট বরাদ্ধ রাখতে হবে, জুম্ম  শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত পরিমাণ বাজেট বরাদ্ধ রাখতে হবে।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions