সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। পাহাড়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী সমূহের তিনদিনের মুল সামাজিক উৎসব বৈসাবি শুরু হয়েছে। চাকমা এবং ত্রিপুরারীতি অনুযায়ী শুক্রবার ভোরে রাঙামাটি শহরেরর রাজবনবিহার ঘাট এবং গর্জনতলী ঘাটে পানিতে ফুল ভাসিয়ে ফুলবিজু উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এছাড়া আদিবাসী তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীরা পাহাড়ের স্ব স্ব পল্লী-গাঁয়ের জলে ও ঝর্ণার পানিতে ফুল ভাসিয়েছে। আজ ফুল বিঝু, কাল মুল বিঝু এবং পরশু গোজ্যাপোজ্যার মাধ্যমে উৎসব শেষ হওয়ার কথা থাকলে এটি চলবে আরো কয়দিন।
আদিবাসীদের সামাজিক উৎসবকে ত্রিপুরা বলে বৈসুক, মারমা বলে সাংগ্রাই, চাকমারা বলে বিজু, অন্যান্য আদিবাসীরা কেউবা বিষু, কেউবা বিসু, বিহু বলে। সব মিলিয়ে এই উৎসবকে এক ভাষায় একে বলা হয় বৈসাবী। বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে এখনো মূখরিত পাহাড়ি জনপদ। মূলতঃ ১২ এপ্রিল পানিতে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে এই উৎসব শুরু হয়েছে। ফুল বিজু শুক্রবার মুল বিজু শনিবার এবং রোববার গোজ্যাপোজ্যার দিন। ১৪ এপ্রিল রোববার শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এ উৎসব আরো কয়দিন থাকবে। উৎসবকে সামনে রেখে শহরাঞ্চল থেকে প্রত্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চল পর্যন্ত সর্বত্র পাহাড়িদের ঘরে ঘরে সাধ্যমত উৎসবের আয়োজন চলে ।
শুক্রবার সকাল ৬টায় রাঙামাটি রাজবন বিহারের পূর্ব ঘাটে আনুষ্ঠানিক ফুল ভাসানো হয়েছে, বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাইং, বিষু, বিহু, চাংক্রান-২০১৯ উদযাপন কমিটির উদ্যোগে। এতে অংশ নেন উদযাপন কমিটির আহবায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, সদস্য সচিব ইন্টুমনি তালুকদারসহ সামাজিক, সুশীল সমাজ, প্রথাগত ও স্থানীয় নেতা, শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ পাহাড়ি নারী-পুরুষ।
শহরের গর্জতনতলীতে ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে ফুল ভাসানো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, এতে রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, প্যানেল মেয়র জামাল উদ্দিন, ত্রিপুরা কল্যান ফাউন্ডেশনের সভাপতি স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরাসহ অন্যরা।
মুল বিজুর দিন আদিবাসীদের ঘরে ঘরে অতিথিদের জন্য পরিবেশন হবে নানান ধরণের খাবার। রান্না হবে হরেক রকম সবজি দিয়ে রান্না করা তরকারি। সকালে দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে পাহাড়ী নারীরা ঘরা বাড়ীর পরিস্কার করে এবং গাছ থেকে পাতা এবং ফুল এনে ঘর সাজায়। ঘর সাজানো হলে নদীর ঘাটে গিয়ে গোসল করে ফুল ভাসায় এবং মুরব্বীদের কাছ থেকে আর্শীবাদ নেয় এবং তাদের নতুন কাপড় চোপর দেয়। মুল বিজুদিন অতিথিদের আপ্যায়ন করে।
আগামী ১৫ এপ্রিল রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের রাইখালীতে মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা মাসসের জল উৎসবের মাধ্যমে সমাপ্ত ঘটবে বৈসাবি আয়োজনের।