শুক্রবার | ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

রাঙামাটির ৩ উপজেলায় ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১২জনের ভোট বর্জন

প্রকাশঃ ১৮ মার্চ, ২০১৯ ০৮:৪৩:৪৮ | আপডেটঃ ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০৭:২৫:৩২  |  ১৫৯০
সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। রাঙামাটির ৩ উপজেলায় ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট কারচুপি,  কেন্দ্রে যেতে বাধা ও রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির অভিযোগে ভোট বর্জন করেছেন। তারা নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রাঙামাটির রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছেন।

নির্বাচনের শুরুতে রাতে ভোটগ্রহণ ও দিনের বেলায় ভোটারদের কেন্দ্রমুখী হতে না দেওয়ার অভিযোগ এনে বাঘাইছড়িতে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বড়ঋষি চাকমা এবং তিন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। এই উপজেলায় জনসংহতি সমিতির সন্তু লারমা গ্রুপের  নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান বড়ঋষি চাকমা  ও জেএসএস এমএন লারমা গ্রুপের নেতা সুদর্শন চাকমা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেএসএস সন্তু লারমার  প্রার্থী বড় ঋষি চাকমা অভিযোগ করেছেন, ‘রোববার রাতেই বিভিন্ন কেন্দ্রে সিল মেরে ব্যালেট বাক্স ভরা হয়েছিল, আজ আবার  অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সকাল থেকেই আমার সমর্থক ও ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়া হয়।’তাই আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলাম। আমার সঙ্গে আরও তিন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীও নির্বাচন বর্জন করছেন।
এরপর পরই নানিয়ারচরে ৪ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৩জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষনা দেয় এবং নানিয়াচরের সহকারি রিটানিং কর্মকর্তার কাছে নির্বাচন স্থগিত ও পুন:নির্বাচনের দাবি জানান।  

নানিয়ারচরে জেএসএস এমএন লারমা গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রার্থী দাবিদার রূপম দেওয়ান অভিযোগ করে বলেন,  ‘রাতে প্রশাসনের সহায়তায় ব্যালেট বাক্স ভর্তি করায় বেশিরভাগ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে গেছে, তাই  দিনের বেলায় ভোটাররা কেন্দ্রেই যেতে পারছে না। তাই আমিসহ তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং চার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে গেলাম।’

তিনি জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী জেন্তিনা চাকমা ও পঞ্চানন  চাকমাও নির্বাচন বর্জন করেছেন।
নানিয়াচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসউদ পারভেজ মজুমদার বলেছেন, তিন চেয়ারম্যান ও চার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন স্থগিত করতে আমার কাছে একটি আবেদন জমা দিয়েছেন। বিষয়টি আমি রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়েছি।
কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকেও জনসংহতি সমিতি সমর্থিত প্রার্থী অর্জুন মনি চাকমা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। দুপুর ১২টার দিকে তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এই উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামীলীগের শামসুদ্দৌহা ও জনসংহতি সমিতির প্রার্থীর অর্জুন মনি চাকমা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।

রাঙামাটির রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এসএম শফি কামাল বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগে স্বপক্ষে তারা কোন প্রমান দিতে পারেনি, আমরাও তদন্ত করেছি অভিযোগের কোন সত্যতা পায়নি। কাপ্তাইয়ে সাক্রাছড়ি স্কুল কেন্দ্রটি অনিয়মের কারনে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এগুলো ছাড়া নির্বাচন শান্তিপুর্নভাবে হয়েছে।

এদিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে সকাল থেকে রাঙামাটি জেলার ২০৩টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। দীর্ঘ লাইন দেখা না গেলেও ভোটারা বিক্ষিপ্ত ভাবে কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়েছেন। ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘœ করতে রাঙামাটির প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রে সেনাবাহিনী র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

রাঙামাটির ১০ টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩০ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন  প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।  সকাল ৮ টা থেকে বিরতীহীন ভাবে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে।  এ দশ উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছে ৪ লাখ ১৮ হাজার ২৪৮ এর মধ্যে (পুরুষ-২লাখ ২০হাজার ৩৯৫, মহিলা-১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৩৫জন)।

এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions