বৃহস্পতিবার | ২৮ মার্চ, ২০২৪
খাগড়াছড়ির এক সাংবাদিকের স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকার আপত্তিকর ছবিকে কেন্দ্র করে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন (কেইউজে)-এর সভাপতি গ্রেপ্তার

প্রকাশঃ ১৪ জানুয়ারী, ২০১৯ ০৯:২৯:১৮ | আপডেটঃ ২৬ মার্চ, ২০২৪ ১২:৩২:১৪  |  ১৯৪১
সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়িতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকার আপত্তিকর ছবিকে কেন্দ্র করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন(কেইউজে)-এর সভাপতি নুরুল আজমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তাকে খাগড়াছড়ি শহরের কেইউজে কার্যালয়ের নিচ থেকে পুলিশ তাঁকে আটক করে। অভিযোগকারী শিক্ষিকা সময় টেলিভিশন এবং দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি জীতেন বড়ুয়ার সাথে সাংবাদিক নুরুল আজমের দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগত বিরোধ চলে আসছিল।
খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওনক আলম জানান, ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ২৯,৩১ ধারায় সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মামলা নং ৬ তাং-১৪/০১/২০১৯ ইং। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বায়েছ ইসলাম জানান, সাংবাদিক নুরুল আজমকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮, ২৯ ৩১ ধারায় করা মামলায় করা সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি নুরুল আজমকে আটকের পর থানা পুলিশ আদালতে প্রেরণ করলে সেঁজুতি জান্নাতের আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। তিনি গ্রেফতারকৃত সাংবাদিককে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এ ঘটনায় সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সাংবাদিক নুরুল আজম কেইউজে সভাপতি ছাড়াও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও এসএটিভি’র খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। তিনি খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ জানান, একটি মামলা দায়েরের এক ঘন্টার মধ্যেই একজন সিনিয়র সাংবাদিক নেতাকে গ্রেফতারের ঘটনায় খাগড়াছড়ির সাংবাদিক সমাজ ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন। যে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও নিয়ে সাংবাদিক নুরুল আজমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তা অনেক আগে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিলো। এর সাথে সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও এসএ টিভির প্রতিনিধি কোন ভাবে জড়িত থাকতে পারে না।

নুরুল আজমের সহধর্মিনী ফারজানা আজম বলেন, যে ছবি ও ভিডিওর কারণে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সে ছবি ও ভিডিওটি অনেক আগে থেকেই সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিলো। এ ঘটনার সাথে তাঁর স্বামী কোন ভাবে জড়িত নয়। সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে তার স্বামীকে মুক্তির দাবী জানান।

সাংবাদিক নুরুল আজমের সহধর্মিনী জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক।  

এঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন, খাগড়াছড়ি মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম, রাঙামাটি রিপোর্টাস ইউনিটি, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সা: সম্পাদক চন্দন কুমার দে, খাগড়াছড়ি জেলা যুবলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

কারাগারে নেয়ার সময় সহকর্মীদের উদেদ্দেশ্যে নুরুল আজম বলেন, এই ঘটনায় আমি সম্পূর্ন নির্দোষ। প্রকৃত তদন্তে অবশ্যই সত্য উন্মোচিত হবেই।

এছাড়া সাংবাদিক নুরুল আজমকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

এদিকে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতেন বড়ুয়া ঘটনার সাথে জড়িত নুরুল আযমের শাস্তি দাবি করে বলেছেন, সে ক্ষমতার অপব্যহার করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মহিলাকে ব্ল্যাক মেইল করে সামাজিকভাবে হেয় করেছে। পুলিশ অভিযুক্ত ব্যাক্তির ফেবুক আইডি তদন্ত করে তাকে গ্রেফতার করেছে। আমরা খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ঘটনার নিন্দা জানাই এবং অভিযুক্ত ব্যাক্তির শাস্তি দাবি করছি।

উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত সাংবাদিক নেতা নুরুল আজম গত ১৮ সেপ্টেম্বর জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আহ্বানে আয়োজিত মত বিনিময় সভায় দুইজন উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরেছিলেন। নুরুল আজমের স্বজনরা অভিযোগ করেন, এরপর থেকেই পুলিশের ওই কর্মকর্তারা সাংবাদিক নুরুল আজমের পরিবারকে নানাভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করে আসছে।

খাগড়াছড়ি |  আরও খবর
এইমাত্র পাওয়া
আর্কাইভ
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions