শাহ আলম, সিএইচটি টুডে ডট কম, রাঙামাটি। ‘‘অস্ত্র দেন, লড়াই করবো’’ করবো উল্লেখ করে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেছেন, রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাস্তা-ঘাট পাকা, বিদ্যুৎ সংযোগ, সম্ভাবণাময় পর্যটন শহর নির্মানসহ সকল প্রকার উন্নয়নে এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধাগ্রস্থ করতে চায় কিংবা করছে পার্বত্য জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। এরা পাহাড়ের মানুষের উন্নয়ন চায় না। তাই এসবের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের হয়ে সংগ্রাম করতে চাই, যুদ্ধ করতে চাই। এখন প্রয়োজন ডাল -তলোয়ার ও অস্ত্র। আপনারা আমাকে অস্ত্র (ভোট) দেন, আমি পাহাড়ের মানুষের জন্য তথা রাঙামাটিবাসীর জন্য অবৈধ অস্ত্রধারী, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করবো।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে "কেমন রাঙামাটি চাই ও নির্বাচনী ভাবনা'' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, পাহাড়ের আগের চেয়ে চাঁদাবাজির পরিমান সামান্য কমেছে। তার কারণ পাহাড়ের সাধারণ মানুষ অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে, আন্দোলন সংগ্রাম করছে। পাহাড়ের সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে। তাই সামান্য চাঁদাবাজির ও অস্ত্রের ব্যবহার কমে গেছে। কমে গেলে হবে না মত প্রকাশ করে তিনি বলেন, যতদিন পার্বত্য অঞ্চল থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, গুম, হত্যা, চাঁদাবাজি একেবারে নিশ্চিহৃ হবে না, ততদিন এদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে, চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তালুকদার বলেন, গত নির্বাচনে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ৫৩টি কেন্দ্রে ৯৫% থেকে ৯৬% ভোট ডাকাতি করেছে। জনসংহতি সমিরি নেতা ঊষাতন এমপি হয়েছে। ১৩ই জুন পাহাড় ধ্বসে ১২০জন প্রাণ হারিয়ে রাঙামাটি জেলায়। কিন্তু একটিবারও তিনি কারো খোজ-খরব নেওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হননি। কারণ তিনি জনগণের ভোটে, জনগণের ভালোবাসায় নির্বাচিত নয়। তিনি গত নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করে বিজয়ী হয়ে তিনি এবং তার দল পার্বত্য অঞ্চলকে জুম্মল্যান্ড বানানোর পায়তারা করেছে। জুম্মল্যান্ডের পতাকা কি হবে? মুদ্রা কি হবে? তা পরিকল্পনা করেছেন। তার কারন তিনি এমপি হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার সন্ধা ৭টায় বনরুপাস্থ আলিফ মার্কেটের ২য় তলায় রাঙামাটি পেশাজীবি সমন্বয় পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাঙামাটিতে সর্বমোট ৬২টি পেশাজীবি সংগঠনের সাথে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, এবার আসন্ন নির্বাচনে আপনারা আর এই সুযোগ করে দিবেন না। যাতে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার, গুম, হত্যা, চাঁদাবাজি পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। তাই তিনি সকলকে চোখ কান খোলা রাখার এবং সাথে সাথে সবাইকে জেগে থাকার জন্য অনুরোধ জানান এবং আগামী ৩০ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত জেগে থাকার আহবান জানান।
এবং সকলের সহযোগিতায় এবার ভোট কাটচুপির সুযোগ দেওয়া হবে না উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ভোট ডাকাতি কিংবা চেষ্টা করলে কেন্দ্রেই প্রতিহত করা হবে বলে।
রাঙামাটি পেশাজীবি সমন্বয় পরিষদের আহব্বায়ক বেলায়েত হোসেন বেলালের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও আসন্ন নির্বাচনে নৌকার একক মাঝি দীপংকর তালুকদার। এছাড়াও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা, চিংকিউ রোয়াজা, সাধারণ সম্পাদক হাজী মুছা মাতাব্বর, সাবেক পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব, বর্তমান পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, রাঙামাটি পেশাজীবি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান প্রমুখসহ বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে ৬২টি পেশাজীবি সংগঠনের মধ্যে থেকে ১০-১৫টি সংগঠনের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক তাদের "কেমন রাঙামাটি চাই ও নির্বাচনী ভাবনা'' নিয়ে তাদের বক্তব্য রাখেন।
সভায় বক্তারা তাদের বক্তব্যে পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত একটি রাঙামাটি জেলা দেখতে চান বলে উল্লেখ করে প্রধান অথিতির কাছে তাদের ভাবনা নিয়ে বক্তব্য রাখেন ও নির্বাচনী ইশতেহারে এ বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করার দাবি জানান।
তারা বলেন, অবৈধ অস্ত্র, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির কাছে পাহাড়ের সাধারণ মানুষ যাতে করে আর কষ্ট না পায়, সাধারণ মানুষের কষ্ট নিরশনে এবারে নির্বাচিত এমপি ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন।
এসময় প্রধান অথিতি দীপংকর তালুকদার পেশাজীবি সংগঠনের সকল দাবি-দাওয়া বিষয়ে মাথায় রেখে কাজ করে যাবে এবং সব-সময় জনগণের কাছে পাশে থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।