সিএইচটি টুডে ডট কম, খাগড়াছড়ি। প্রবারণা পূর্ণিমার উৎসবের একদিন আগে খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারায় নবনির্মিত একটি বৌদ্ধ বিহারে হামলা ও বুদ্ধমূর্তি ভাংচুর করেছে অজ্ঞাত দুর্বত্তরা। সোমবার গভীর রাতে হাফছড়ি ইউনিয়নের কুকিছড়া এলাকায় নির্মিত ‘জেতবন বৌদ্ধ বিহারে’ এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বুদ্ধমূর্তিটি পুনঃস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চান্দামুনি বৌদ্ধবিহারে এলাকাবাসী ও ভিক্ষু সংঘদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা করেন প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, গুইমারা সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার এ কে এম সাজেদুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান, মাটিরাঙ্গা সেনা জোনের অধিনায়ক লে. কর্ণেল নওরোজ, সিন্দুকছড়ি সেনা জোনের অধিনায়ক লে. কর্নেল রুবায়েত মাহামুদ, জেলা পরিষদ সদস্য মংসুইপ্রু চৌধুরী, গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ বড়ুয়া, খাগড়াছড়ি বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্টের সভাপতি বাসন্তী চাকমা প্রমূখ।
মতবিনিময় সভার আগে বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘদের সাথে গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার এ কে এম সাজেদুল ইসলাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. শাহেদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে কুশল বিনিময় করে বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘদের অন্ন ও বস্ত্রদান করে তাদের নিকট থেকে আর্শিবাদ কামনা করেন ।
এ সময় তারা এলাকাবাসী ও ভিক্ষুসংঘদের কথা শুনেন এবং তাদের দাবী অনুযায়ী আগামী দুই এক মাসের মধ্যে নতুন করে বিহার নির্মাণ ও বুদ্ধ মুর্তি স্থাপনের আশ^াস প্রদান করেন।
এদিকে চান্দামুনি বৌদ্ধবিহার এলাকায় আলোচনা সভা চলাকালে একটি বিক্ষোভ মিছিল রামসু বাজার এলাকা থেকে গুইমারা বাজারে আসে সেখানে বিক্ষোভ মিছিল করে শত শত নারী ও পুরুষ। এসময় চান্দামুনি বৌদ্ধ বিহার থেকে এসে ভিক্ষুসংঘ, প্রশাসনের লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা তাদের শান্ত করেন।
গুইমারা থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে বিনষ্ট করতে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনায় কারা জড়িত তা উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নে গত সোমবার দিবাগত রাতে বৌদ্ধ মন্দির ও মুর্তি ভাংচুর করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর এলাকা জুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনায় নিরাপত্তাবাহিনী দায়ী করে একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষথেকে জানানো হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি বিশেষ টহল জোরদার করা হয়েছে।